দেশের গণ্ডি পেরনোর জন্য পাসপোর্ট কতটা জরুরি তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু পাসপোর্ট একবার করলেই ঝামেলা শেষ হয়ে গেল এটা ভাবা ভুল কারন সাধারনত পাসপোর্টের মেয়াদ পাঁচ বছরের বেশি থাকে না। তাই পাসপোর্ট নবায়ন করাও বেশ জরুরি। নতুন পাসপোর্ট করা আর পাসপোর্ট নবায়ন করার প্রসেস একই রকম। মনে রাখা ভালো ভিসা পাওয়ার জন্য পাসপোর্টের মেয়াদ মিনিমাম ছয় মাস থাকতে হয়। আজকের আর্টিকেল পড়লে আপনারা জানতে পারবেন পাসপোর্ট কিভাবে নবায়ন করবেন? আপনারা যদি কেউ পাসপোর্ট তৈরি করাতে চান তাহলে আমার পাসপোর্ট কিভাবে তৈরি করবেন এই আর্টিকেলটি পড়ে দেখতে পারেন। 

পাসপোর্টে যদি কোন সংশোধন করাতে করতে চান অথবা পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি পাসপোর্ট নবায়ন করতে হবে এবং সংশোধন করতে হবে। এটা না হলে বিদেশে যাবার ক্ষেত্রে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। চলুন তাহলে পাসপোর্ট নবায়ন করার জন্য যা করতে হবে সে সম্পর্কে জেনে নেই।

পাসপোর্ট নবায়নের ফরম সংগ্রহঃ

পাসপোর্ট নবায়ন বা সংশোধনী করার জন্য আপনাকে সরকার নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। ফরমটি হচ্ছে DIP from 2। এই ফরমটি আপনি পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে সংগ্রহ করতে পারেন অথবা ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করতে পারেন। ডাউনলোড করার পর ফরমটি প্রিন্ট করতে হবে। যথাযথভাবে পূরণ করে নির্দিষ্ট পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে জমা দিতে হয়। আপনি যদি পাসপোর্ট নবায়ন বা সংশোধন করতে চান তাহলে তার জন্য এই একই ফর্ম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে খুব মনোযোগ সহকারে কোন ভুল না করে ফরমটি পূরণ করতে হয়।

ব্যাংকে টাকা জমা  দেয়াঃ

পাসপোর্টের টাকা জমা দেওয়ার নির্ধারিত ব্যাংকে গিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নির্ধারিত স্লিপ সংগ্রহ করতে হবে। এরপর তা পূরণ করে সাধারণ ক্ষেত্রে ৩৪৫০ টাকা, জরুরী হলে ৬৯০০ টাকা ফি দিতে হয়। যদি আপনার পূর্বের পাসপোর্ট এর মেয়াদ শেষ হয়ে যায় সে ক্ষেত্রে প্রতি বছরের জন্য ৩৪৫ টাকা জরিমানা সহ আরেকটি আলাদা ব্যাংক স্লিপ নিয়ে তা যথাস্থানে জমা দিতে হবে। এই খরচগুলো মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট এর জন্য ও প্রযোজ্য। 

এবার আসুন জেনে নেয়া যাক যে সকল ব্যাংকে পাসপোর্ট ফি জমা দেয়া যায়ঃ

  • সোনালী ব্যাংক
  • ট্রাস্ট ব্যাংক
  • ব্যাংক এশিয়া
  • প্রিমিয়ার ব্যাংক
  • ঢাকা ব্যাংক
  • ওয়ান ব্যাংক।

 যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন হয়ঃ

নতুন করে পাসপোর্ট নবায়ন করতে ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার স্লিপ এবং নির্ধারিত ফরম পূরণের পর ফরমের সাথে কিছু ডকুমেন্টস বা পেপার জমা দিতে হয় সেগুলো হলো-

  • পুরানো পাসপোর্ট এবং এর সত্যায়িত কপি
  • জাতীয় পরিচয় পত্র জন্ম নিবন্ধন এর সত্যায়িত কপি
  • ছবি  
  • নবায়নের আবেদন পত্র জমা এবং পাসপোর্ট ডেলিভারির সময় পুরাতন পাসপোর্ট অবশ্যই সাথে নিতে হবে। আবেদনপত্র জমা নেওয়ার সময় পুরাতন পাসপোর্ট দেখে আবার আপনাকে ফেরত দিয়ে দিবে এবং পাসপোর্ট ডেলিভারির সময় পুরাতন পাসপোর্ট দেখে ফেরত দিয়ে দিবে।

সংশোধন করা যাবে যেসব বিষয়ঃ

মনে রাখতে হবে আবেদন ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে কোন ভুল করা যাবে না। আপনারা যারা পুরাতন বা বর্তমান পাসপোর্ট এর তথ্য পরিবর্তন করতে চান সে ক্ষেত্রে ফর্মে বর্তমান প্রদর্শিত তথ্য পরিবর্তন করে কি দিতে চান তা উল্লেখ করতে হবে। বর্তমান পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিজের নাম, বাবার না্‌ম, মায়ের নাম এবং জন্ম তারিখ পরিবর্তন করা সম্পূর্ণ বন্ধ আছে। শুধুমাত্র প্রফেশন, স্বামী স্ত্রীর নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নাম্বার শুধু পরিবর্তন করা যাবে এছাড়া আর কিছু পরিবর্তন করতে পারবেন না।

এই কাজগুলো শেষে নির্দিষ্ট সময়ে পাসপোর্ট অফিস থেকে আপনার মোবাইল নাম্বারে মেসেজ আসবে। পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে আপনার পাসপোর্টটি নিয়ে আসলেই আপনার পাসপোর্ট নবায়ন করা শেষ হবে।